 |
ছবি : খায়রুল ইসলাম |
দরিদ্র রাখাল খুব ভোরে সূর্য উঠার সাথে সাথে ঘুম থেকে উঠে কোন মতে কিছু খেয়ে কাজে বের হয়। সারাদিন মাঠে কাজ করে, নিজের জমি বলতে ঐ সামান্য একটুকরো ধানি জমি আর আছে একটি মাত্র গরু, সারাদিন মাঠে কাজ করার সময় গরুটিকে ঘাস খাওয়ানোর জন্য মাঠের এক পাশে বেঁধে রাখে । কখনও নিজের জমিতে বা কখনও অন্যের জমিতে দিনমজুরি করে তার দিন চলে। তা থেকে যা আয় হয় তা দিয়ে সংসার চালাতে সে হিমশিম খায়, কিন্তু গরুটি তার আশার সম্বল । সংসারে বাড়তি দুটো টাকা আসে গরুর দুধ বিক্রি করে । দরিদ্র কৃষক পরম যত্ন ও ভালোবাসা দিয়ে গরুটি কে পালন করে । তাকে দু চোখের আড়াল করেনা পাছে সে হারিয়ে যায় বা তার কোন ক্ষতি হয়। তাই দিনের কাজের সময়ে চোখের সামনে মাঠের ঘাসবহুল জমিতে তাকে বেঁধে রাখে । নদীতে নিয়ে গোসল করায় । আবার যখন দিন ফুরিয়ে সন্ধ্যা নামে তখন গরুটিকে সঙ্গে করে বাড়ি ফিরে আসে । পরম যত্নে লালন করে, কারণ সে দুধ পায়, যা বিক্রি করে সংসারে বাড়তি দুটো টাকা আসে । গোধূলি লগ্নে সে যখন গরুটিকে সাথে নিয়ে ঘরের উদ্দ্যেশে রওয়ানা হয় তখন শেষ বিকেলের মায়াবি আলোয় দরিদ্র কৃষকের মন পরম কৃতজ্ঞতায় ভরে উঠে গরুটির প্রতি । সে সপ্নাবির অতি সন্তর্পনে ধীরে ধীরে গরুটিকে নিয়ে সারাদিনের সমস্ত কর্মক্লান্তিকে পেছনে ফেলে গৃহের উদ্দ্যেশে চলতে থাকে, মনে মনে ভবিষ্যতের সুখ স্বপ্নের জাল বুনতে থাকে । একদিন গরুর বাছুরটি বড় হবে সেটা বিক্রি করে বাড়িতে ভালো একটা ঘর দেবে। গোধুলির রক্তিম আভা কৃষকের মনে মায়াবি আলো ফেলে। সে ধীরে ধীরে এগিয়ে যায় গ্রামের মেঠো পথ ধরে।
ছবিটি চিত্রক'র জুন-২০১৭ এর সেরা ছবি নির্বাচিত হয়েছে।
No comments:
Post a Comment